খতিয়ান অনেকেই অনেক ভাবে দেখে থাকেন। তবে খতিয়ান আগেকার যুগে জমিদার দের খাজনা আদায়ের একটি নথি ছিল যা এখনো সরকারের কাছে অনেকটা সেরকমই। খতিয়ান কোন জমি কার দখলে এবং কে খাজনা দিবে সেটা নির্দেশ করে। চলুন জেনে নেয়া যাক খতিয়ান কত প্রকার, কি কি, কিভাবে চিনবেন কোনটা কোন খতিয়ান।
১। সিএস খতিয়ান (৪০ খতিয়ান)
১৮৮৯ – ১৯৪০ জমিদার প্রথা থাকাকালীন জমিদার/রাজা রা তাদের প্রজা দের চাষাবাদ এর জন্য দেয়া জমির খাজনা তুলতে এটি প্রস্তুত করেছিল।
জরীপ সময়কালঃ ১৮৮৯ – ১৯৪০
চেনার উপায়ঃ ফ্রন্ট পেজে দুই ভাগে উপরে/নিচে দুই ভাগে খতিয়ান তৈরি করা। উপর অংশে জমিদার এর পরিচয়/বিবরণ, নিম্বে যে প্রজার দখলে আছে তার পরিচয়/বিবরণ। জেলার পরিবর্তে পরগনা লেখা থাকবে। এবং, পেজ এর অপর পিঠেও তথ্য থাকবে। তথ্যগুলো লম্বালম্বি লাইনে থাকবে।
২। এসএ খতিয়ান (৬২ খতিয়ান)
জমিদার প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর ভারতবর্ষ ভাগ হয়ে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্টার পর ১৯৫৬ সাল থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান সরকার জরিপ করে যে খতিয়ান টি প্রস্তুত করে সেটিই এসএ বা ৬২ খতিয়ান নামে পরিচিত।
জরীপ সময়কালঃ ১৯৫৬ – ১৯৬২
চেনার উপায়ঃ প্রথম কলামের উপরে সাবেক/হাল লেখা থাকে যেখানে সাবেক বলতে পুরাতন সিএস খতিয়ান এর রেফারেন্স থাকবে এবং হাল বলতে নতুন এসএ খতিয়ান নং থাকবে। এসএ খতিয়ান সব সময় ১ টি পেজে(শুধুমাত্র ফ্রন্ট পেজে) হয়।
৩। আরএস খতিয়ান
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত জরিপ চালিয়ে যে খতিয়ান প্রস্তুত করে সেটি আরএস খতিয়ান নামে পরিচিত। এটি বাংলাদেশ প্রতিষ্টার পরবর্তী সময়ের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খতিয়ান।
জরীপ সময়কালঃ ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত
চেনার উপায়ঃ লম্বালম্বি লাইনে তথ্য থাকে। প্রিন্ট কপি হলে উপরে আরএস খতিয়ান লেখা থাকবে। সচরাচর পেজের দুই পিঠেই তথ্য থাকে। উপরে ডান পাশে সার্ভে নং থাকে।
৪। সিটি জরিপ / বিএস খতিয়ান
১৯৯৯/২০০০ সাল থেকে শুরু করে বিভিন্ন এলাকায় বর্তমানেও চলমান জরিপ থেকে প্রস্তুতকৃত খতিয়ানটিই বিএস খতিয়ান নামে পরিচিত। আবার, মহানগর এলাকায় গুলোয় এটিকে সিটি জরিপ বলে। ঢাকার সিটি জরিপ সম্পূর্ণ রূপে প্রস্তুত শেষ হয়েছে। এবং, ঢাকার বিএস খতিয়ানের উপরে ঢাকা সিটি জরিপ লেখা থাকে।
জরীপ সময়কালঃ ১৯৯৯ থেকে চলমান।
চেনার উপায়ঃ সিটি বা বিএস খতিয়ান সব সময় প্রিন্টেড হবে। প্রিন্ট কপির নিচে প্রেস এর তারিখ ২০০০ সালের পরের তারিখ হবে।
৫। নামজারি / মিউটেশন খতিয়ান
উপজেলা এসি ল্যান্ড অফিস থেকে নামজারি বা মিউটেশন করার পর যে খতিয়ান টি প্রদান করে সেটি সাধারণত নামজারি খতিয়ান নামে পরিচিত।
চেনার উপায়ঃ কেস নাম্বার থাকবে। জোত নং লেখা থাকবে।
This Post Has 0 Comments